কুমিল্লা সড়ক বিভাগ কিছুদিন পরপরই মহাসড়কটি সংস্কার করলেও, এক মাসের বেশি টিকছে না এই সংস্কার কাজ। অভিযোগ রয়েছে, প্রায় প্রতিবারই ভিটি বালু আর নিম্নমানের ইটের খোয়া ব্যবহার করেই সংস্কার করা হয় সড়কটি।
এদিকে, গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে এই সড়কের অধিকাংশ জায়গায় পিচ উঠে গিয়ে ছোট-বড় অন্তত শতাধিক গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। আর এসব গর্তে পড়ে প্রতিদিনই যাত্রী এবং মালবাহী বিভিন্ন যানবাহন দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগসহ বিভিন্ন সূত্র জানায়, দেশের অন্যতম ব্যস্ত কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কটি সিলেটের সাথে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের চলাচলের প্রধান সড়ক পথ। এ পথে প্রতিদিনই সিলেট থেকে কয়েক’শ পাথরবাহী ট্রাক চট্টগ্রামসহ দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে চলাচল করে। বিশেষ করে এ সড়ক ব্যবহার করে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে বিপুল পণ্যবাহী ট্রাক-লরি আখাউড়া স্থলবন্দর হয়ে ভারতের আগরতলায় মালামাল নিয়ে যায়। এছাড়া এ সড়ক ব্যবহার করে দেশের অন্তত ১৫টি জেলার বিভিন্ন গন্তব্যে আসা-যাওয়া করে পণ্যবাহী যানবাহনগুলো।
জেলার দেবিদ্বার ও মুরাদনগরের স্থানীয়রা জানান, গত এক বছর ধরে এ মহাসড়কের বিভিন্ন এলাকায় বিচ্ছিন্নভাবে সংস্কার কাজ করা হচ্ছে। সংস্কার কাজের অজুহাতে প্রায়ই সড়কের দুই লেনের মধ্যে একটি লেন বন্ধ রাখা হচ্ছে। এতে ব্যাপক যানজটের কবলে পড়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ যাত্রীরা।
মহাসড়কের জাফরগঞ্জ, কংশনগর, ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট এবং কোম্পানীগঞ্জ এলাকায় গত এক বছর যাবত খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে সংস্কার কাজ চলছে। কাজের ধীরগতিতে এসব এলাকায় প্রায়ই তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে এ মহাসড়কের কুমিল্লার ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট থেকে দেবিদ্বার এলাকা পর্যন্ত সড়কের সংস্কার কাজের দরপত্র আহ্বান করা হয়। এরপর দেবিদ্বার এবং কংশনগর এলাকায় সংস্কার কাজ শুরু করা হলেও, এখনও শেষ হয়নি কংশনগর ও জাফরগঞ্জ অংশের কাজ।
আবুল কালাম নামে এক বাস চালক জানান, গত প্রায় ১৫ বছর ধরে প্রতিনিয়ত এই আঞ্চলিক মহাসড়কে গাড়ি চালাতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। মাঝে মধ্যে সড়কটি সংস্কার করা হলেও এক মাসও তা টেকে না। এই সড়ক দিয়ে ওভারলোডের অনেক গাড়ি চলাচল করায় এটি দ্রুত সময়ের মধ্যে টেকসইভাবে নির্মাণ করা দরকার।
জেলার দেবিদ্বার এলাকার বাসিন্দা খোকন মিয়া জানান, প্রায় সময় সড়কটি সংস্কারে ভিটি বালু আর নিম্নমানের ইটের খোয়া ব্যবহার করা হচ্ছে। টানা কয়েক ঘণ্টা বৃষ্টি হলেই এ রাস্তার পিচ উঠে যায়। বৃষ্টির পানি জমে সড়কে ছোট-বড় গর্ত সৃষ্টি হয়।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী ড. মো. আহাদ উল্লাহ বলেন, ‘এই মহাসড়কে যে পরিমাণ লোড নিয়ে ভারি যানবাহন চলাচল করছে, সেই তুলনায় সড়কটির সক্ষমতা ১০ ভাগের একভাগও নেই। বিশেষ করে সড়কটির নিচে ইমপ্রুভ সাবগ্রেড নেই। যার কারণে সড়কটি বেশি লোড বহন করতে পারে না। পুরো সড়কটি নতুনভাবে নির্মাণ করা প্রয়োজন।’
বর্তমানে ইটের খোয়া এবং বালু বিটুমিন দিয়ে মেরামত কাজ চলছে উল্লেখ করে, বৃষ্টির মৌসুম শেষ হলে সড়কটির টেকসইভাবে সংস্কার করা হবে বলে জানান তিনি।